Sunday 14 January 2018

ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার / শ্রাবন্তী নাহা অথৈ



বইয়ের চেয়ে উত্তম উপহার এবং ভালোবাসার চেয়ে শ্রেষ্ঠ কাজ আর নেই আর এই দুটির সমন্বয় যদি ঘটানো যায় তাহলে যে কারো জীবন হয়ে ওঠে মধুর এবং ভালোবাসাময় যে জীবনে ভালোবাসা থাকে সে জীবনে সবকিছু পাওয়া হয়ে যায় জীবন হয়ে ওঠে স্বর্গীয় প্রাপ্তির চেয়ে প্রত্যাশিত সুখের বিরল উৎস প্রত্যেকের চিন্তা-চেতনা, চাওয়া-পাওয়া, রুচি-অরুচির ভিন্নতা আছে, আলাদা অনুভূতি আছে, যা ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন কিন্তু ভালোবাসা এবং বস্তু হিসেবে বইয়ের ক্ষেত্রে সবার ইচ্ছা অভিন্ন ভালোবাসা পেলে যে খুশি হয় না সে পশুও নয়, জড়; মরা লাশ বই পেয়ে যে আপ্লুত হয় না, সে লাশের চেয়েও অধম তবে বই হতে হবে প্রিয়জনের মনকে নাড়া দেওয়ার মতো অনিন্দ্য আমি এখানে এমন দুটি বই নিয়ে আলোচনা করব, যে বই দুটি আপনার প্রিয়জনকে দিলে এবং আপনার প্রিয়জন আপনাকে দিলে পরস্পরের প্রতি শুধু ভালোবাসা নয়, গভীর কৃতজ্ঞতার নিবিড় আবেশে নতুন একটা জগৎ সৃষ্টি হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে যাবে বহুগুণ বেড়ে যাবে পরস্পর প্রীতি কারণ বই দুটিতে এমন বিষয় আছে, যা ভালোবাসার মূল্য কী এবং কীভাবে, কোথায় কাকে ভালোবাস দিতে হয় এবং কীভাবে তা স্থায়ী করা যায়- সেটিই উপন্যাসের পাত্রপাত্রীদের আচরণে তুলে ধরা হয়েছে
তিনে দুয়ে দশ

তিনে দুয়ে দশ. মোহাম্মদ আমীন স্যারের লেখা একটি উপন্যাস যে কোনো পর্যায়ের যে কোনো বয়সের সিনিয়র, মুরব্বি, গুরুজন বা বয়স্কদের প্রতি কোনো জুনিয়র বা শিশুকিশোর কোনো উপহার দিতে চাইলেতিনে দুয়ে দশউপন্যাসের চেয়ে আর কোনো ভালো
উপহার হতে পারে না। মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, সব পর্যায়ের অগ্রজ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক শিক্ষিকা, নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, সিনিয়র নেতা প্রভৃতিসহ যে কোনো মুরব্বি বয়স্ক গুরুজনকে যদি এমন কোনো উপহার দিতে চান, যে উপহার পেলে তিনি খুশি হবেন এবং আপনার প্রতি তার ভালোবাসা, দরদ, মায়ামমতা, স্নেহ, সহানুভূতি, ধৈর্য, বিবেচনাবোধ, সন্তুষ্টি প্রভৃতি বেড়ে যাবে; তাহলে আমি বলব আপনি, তাকে . মোহাম্মদ আমীন স্যারের লেখাতিনে দুয়ে দশউপন্যাসটি উপহার দিন। ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করা যায়, পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যা ভালোবাসা দিয়ে আদায় করা যায় না- এটিই বইটির মূল্য বিষয়। বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লিখিত এই বইটি হতে পারে ভালোবাসা দিবস-সহ যে কোনো দিবসে আপনার যে কোনো বয়সের এবং যে কোনো সম্পর্কের প্রিয়জনকে দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার


তিনে দুয়ে দশ একটি অনবদ্য উপন্যাস। অনবদ্য বলার কারণ আছে। এটি শুধু কথার কথা নয়। নিজের অভিজ্ঞতা হতে লিখিত এই উপন্যাসটি শিশুকিশোর হতে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্য উপযোগী এবং দ্রুত মননশীলতার পরিবর্তনের এক যাদুকরি শক্তি রয়েছে। এই উপন্যাসের কাহিনী বিরল ভালোবাসার অনন্ত মহিমা যেন। যা সবার মনে দাগ কাটতে সক্ষম। শিশু-কিশোরদের
মনমানসিকতাকে আদর্শ চেতনায় জাগ্রত করতে হলে বয়স্কদের কী করতে হবে, কেমন হতে হবে তাদের আচরণ, কীভাবে তাদের মূল্য দিতে হবে প্রভৃতি ছাড়াও এই বিষয়ে অভিভাবক, শিক্ষক সমাজের কর্তব্য কী, তা অতি হৃদয়গ্রাহী ভাষায় অনুপম এক গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। আবার জ্যেষ্ঠদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং আনুগত্য পেতে হলে অনুজদের কী করতে হবে তাও এই উপন্যাসে বাস্তব ঘটনার মধ্য দিয়ে বর্ণিত হয়েছে।

লেখকের জীবন থেকে নেওয়া এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে পুথিনিলয়। পাওয়া যাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলার পুথিনিলয় স্টলে। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেছেন মামুন হোসাইন। মূলত ভালোবাসা কী, কীভাবে ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীর সব সমস্যার সমাধান করা যায়, অতি খারাপকেও ভালো লোকে পরিণত করা যায়, অতি খারাপ ছাত্র বা সন্তানকেও মেধাবী করে দেওয়া যায়; সেটাই এই গ্রন্থে লেখক তার জীবনের একটি ঘটনা দিয়ে উপন্যাসে উপন্যাসে বিধৃত করেছেন। আমি মনে করি, এটি ভালোবাসা দিবসসহ প্রত্যেক দিবসে, বিশেষ করে পিতামাতা মরুব্বিদের প্রতি এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতি হতে পারে শ্রেষ্ঠ উপহার


ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা

ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা . মোহাম্মদ আমীনের লেখা একটি গল্পগ্রন্থ। গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার আগে এর একটি গল্প ফেসবুকে
প্রকাশিত হয়। গল্পটি ফেসবুকে প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফেসবুক ভাইরাল হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। স্যার আমাকে বিয়ে করুন নামের গল্পটি দিয়ে অনেকগুলি চ্যানেল ভিডিও পর্যন্ত তৈরি করে। অর্থনীতির অধ্যাপক সেলসম্যান এবং বউশিরোনামের গল্পটি ফেসবুকে প্রকাশিত হওয়ার বোদ্ধামহল গল্পের নতুন আস্বাদন পায় যেন। আমি গল্প দুটি পড়ে এতই বিমুগ্ধ হয়ে পড়ি যে, আমি আপনাদের জন্য এই লেখা লিখতে অনুপ্রাণিত হলাম। এই বইয়ের ভালোবাসার গল্পগুলি পড়ে আমার মনে গল্প সম্বন্ধে যে ধারণা ছিল, তা পাল্টে গিয়ে নতুন একটা ধারণা সৃষ্টি করল। গল্প শুধু গল্প নয়। জীবন, জীবনটাই গল্প। আর একটা জিনিস উপলব্ধি করতে পারলাম, লিখতে জানলে যে কোনো সাধারণ বিষয়ও অসাধারণ হয়ে উঠে। যেমন পরিবেশনার গুণে সাধারণ খাবার হয়ে ওঠে তৃপ্তির চূড়ান্ত অবগাহন। ভালোবাসা কী এবং ভালোবাসা দিয়ে জীবনকে কীভাবে বদলে দেওয়া যায় তা আমি এই বই পড়ে আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছি। ভালোবাসা জীবনের জন্য অপরিহার্য। যে জীবনে ভালোবাসা নেই সে জীবনে যেন কিছু নেই। এই বইয়ে ভালোবাসার মাধ্যমে জীবনগড়ার প্রতিটি দিক, প্রতিটি ক্ষণ এবং প্রতিটি বিষয় গল্পে গল্পে তুলে আনা হয়েছে। জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখলেও এমন লেখা যায় না, অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নিরীক্ষণ করতে হয় অনুভবের বাস্তবতায়। স্বপ্নকে টেনে নামাতে হয় জীবেনর কানায়। গল্পসমূহ পড়লে বোঝা যায়, লেখক তাই করেছেন এবং ভালোবাসাকে খুব ভালোভাবে প্রেমময় অনুভবে নিরীক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। গল্পসমূহের ভাষা এত সহজ এবং শব্দচয়ন এত মনোরম যে, পড়লে মন বিগলিত হয়ে যায়। যে কোনো মন তা যতই কঠিন হোক না কেন, নরম হয়ে যায়। গল্পগুলির ভাষা ভালোবাসার মতোই প্রাঞ্জল। গল্পগুলিতে মুগ্ধতা যেন হৃদয়ের আবেগে তাড়িত হয়ে প্রেমে প্রেমে একাকার হয়ে গেছে। অল্পকথায় অনেক
শ্রাবন্তী নাহা অথৈ
বেশি প্রকাশের ক্ষমতা, ছোটো কথায় ভালোবাসার সাহসী প্রকাশ এত ঋদ্ধ যে, গল্প শেষ না করে কোনোভাবে ছাড়া যায় না। এমন অনুভূতির জন্যই হয়তো বইকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বন্ধু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ভালোবাসাকে বলা হয়েছে স্বর্গীয় অসাধারণ ২০টি গল্প নিয়ে সজ্জিত এই বইটি পড়লে পাঠক এবং পাঠকের উত্তরসুরী- সবার বিবেক ভালোবাসার মাধুর্যে আনন্দ আর মমতার ঔদার্যে সবার মন বিকশিত হয়ে উঠবে। পরস্পরের প্রতি সৃষ্টি হবে স্নেহপ্রেমপ্রীতি এবং উদার সহানুভূতি। ভালোবাসা দিয়ে কীভাবে একজন দুষ্ট ছেলেকেও কিংবা অবাধ্য বন্ধুকেও নিজের একান্ত ভালোবাসার আনুগত্যে পরিণত করা যায়, তার কৌশল এই বইয়ে বাস্তব গল্পে বিধৃত করা হয়েছে। বইটি পাবেন অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পুথিনিলয়-এর স্টলে।